25 Nov 2024, 08:45 am

২৮ অক্টোবর রাজনৈতিক কর্মসূচি প্রত্যাহারের আহ্বান বৌদ্ধ সম্প্রদায়

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব প্রবারণা পূর্ণিমা উদযাপিত হবে আগামী ২৮ অক্টোবর। এদিন দেশের রাজনৈতিক দলগুলোকে রাজনৈতিক কর্মসূচি প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ বৌদ্ধ সম্মিলিত সমাজ।

সোমবার (২৩ অক্টোবর)  ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে বাংলাদেশ সম্মিলিত বৌদ্ধ সমাজ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা এ আহ্বান জানান।

সংবাদ সম্মেলনে বৌদ্ধ সমাজের যুগ্ম মহাসচিব সুমন কান্তি বড়ুয়া বলেন, আগামী ২৮ অক্টোবর শুভ প্রবারণা পূর্ণিমা উদযাপিত হবে। বাংলাদেশের বৌদ্ধ সম্প্রদায় প্রতি বছরের ন্যায় হৃদয়ের গভীর শ্রদ্ধা ও ধর্মীয় আচার এবং সামাজিক-সাংস্কৃতিক আনুষ্ঠানিকতায় এই দিনটি পালনের জন্য বিগত এক বছর ধরে অপেক্ষা করে আসছে। বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের এই তিথি বা উৎসব পূর্ণিমাকে কেন্দ্র করে অনুষ্ঠিত হয় বিধায় এক বছর পূর্বেই এই ধর্মীয় অনুষ্ঠানের দিন-তারিখ নির্দিষ্ট হয় এবং সব সরকারি-বেসরকারি পঞ্জিকায় এটি অন্তর্ভুক্ত থাকে। তাই আমাদের প্রত্যাশা ছিল অবশ্যই দূরদর্শী চিন্তা সম্পন্ন এ দেশের রাজনৈতিক প্রাজ্ঞ নেতৃবৃন্দ যেকোনো রাজনৈতিক কর্মসূচির ক্ষেত্রে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির কথা বিবেচনা করে আসন্ন পূর্ণিমা তিথিকে রাজনৈতিক কর্মসূচি মুক্ত রাখবেন।

‘কিন্তু দুঃখের বিষয় যে, দেশের কিছু রাজনৈতিক দল হয়ত অনিচ্ছাকৃত ও অনবধানবশত উক্ত দিবসে কর্মসূচি প্রদান করেছেন, ইতোমধ্যে এই কর্মসূচি নিয়ে চলছে নানা মাত্রিক প্রচারণা । যা সাধারণ বৌদ্ধ জনগোষ্ঠীর মনে তাদের ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহণের ক্ষেত্রে ভীতির সঞ্চার হয়েছে, তারা আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। যে কারণে এই পবিত্র পূর্ণিমা দিবসে ধর্ম-প্রাণ বৌদ্ধ জনগোষ্ঠী নির্বিঘ্নে যাতায়াতের ক্ষেত্রে শংকিত হয়ে পড়েছে। ’

সুমন কান্তি বলেন, বৌদ্ধ ধর্মীয় অনুষ্ঠানগুলো মূলত বৌদ্ধ বিহার কেন্দ্রিক। তাই বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা যে যেখানেই বসবাস করুন না কেন, ধর্মীয় তিথিতে সবাই বিহারে সমবেত হয়। এ জন্য শঙ্কাহীনভাবে ধর্ম পিপাসু মানুষের যাতায়াত এবং দ্বিধাহীন চিত্তে ধর্ম পালনের যথার্থ পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে আমরা দেশের রাজনৈতিক দল ও রাজনীতিবিদদের সহোযোগিতা কামনা করছি।

তিনি বলেন, পবিত্র প্রবারণা পূর্ণিমার একটি বিশেষ সংস্কৃতি বা আচার অনুষ্ঠান আছে যা বৌদ্ধসম্প্রদায় ছাড়াও আমাদের ভ্রাতৃ-প্রতিম ইসলাম সম্প্রদায়, হিন্দু সম্প্রদায় ও খ্রিষ্টান সম্প্রদায়সহ অন্যান্য জাতি-গোষ্ঠীকেও আকর্ষণ করে। তা হলো বৌদ্ধদের ঐতিহ্যবাহী ফানুস উত্তোলন উৎসব। এই ফানুস উত্তোলনে ধর্মীয় দিক ছাড়াও সর্বজনীন মানবিক আনন্দের ঐতিহ্য রয়েছে। যে কারণে এটিকে বাঙালির চিরায়ত সামাজিক উৎসবও বলা যায়। প্রতিবছর ফানুস উত্তোলনের মতো এমন একটি সর্বজনীন ঐতিহ্যবাহী অনুষ্ঠানের জন্য বৌদ্ধদের সঙ্গে দেশের ধর্ম-বর্ণ সম্প্রদায় নির্বিশেষে মুসলিম, হিন্দু ও খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের ভাই-বোনেরাও অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে এই উৎসব দেখার জন্য।

তিনি আরও বলেন, প্রবারণা পূর্ণিমা শুধু একদিনের একটি অনুষ্ঠান মাত্র নয়। প্রবারণা পূর্ণিমার পরদিন হতে একমাস ব্যাপী দেশের বৌদ্ধ বিহারসমূহে অনুষ্ঠিত হবে পবিত্র কঠিন চীবর দানোৎসব। এই কঠিন চীবর দান অনুষ্ঠান নির্দিষ্ট একমাস সময়ে মধ্যে বিভিন্ন বৌদ্ধ বিহারে বিভিন্ন সময়ে অনুষ্ঠিত হবে। এই অনুষ্ঠান নির্দিষ্ট একমাসের মধ্যে যেকোনো সময় আয়োজন করা সম্ভব হলেও প্রবারণা পূর্ণিমা নির্দিষ্ট পূর্ণিমা তিথিতেই আয়োজন করা বিধেয়। অন্য কোনো বিকল্প তিথিতে এই পূর্ণিমার আয়োজন করা সম্ভব নয়।

‌‘তাই আমাদের প্রত্যাশা আগামী ২৮ অক্টোবর বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের ধর্মীয় তিথির গুরুত্বের কথা বিবেচনা করে রাজনৈতিক কর্মসূচি প্রত্যাহার করবেন।’

 

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

  • Visits Today: 14748
  • Total Visits: 1302683
  • Total Visitors: 4
  • Total Countries: 1668

আজকের বাংলা তারিখ

  • আজ সোমবার, ২৫শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং
  • ১১ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (হেমন্তকাল)
  • ২২শে জমাদিউল-আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরী
  • এখন সময়, সকাল ৮:৪৫

Archives

MonTueWedThuFriSatSun
    123
252627282930 
       
15161718192021
293031    
       
  12345
2728     
       
     12
3456789
10111213141516
17181920212223
31      
  12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930   
       

https://youtu.be/dhqhRb9y018